দারবিশ

admin

উপন্যাস

লেখক: লতিফুল ইসলাম শিবলী

প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ভিয়েতনাম যুদ্ধ আর শীতল যুদ্ধে অস্থির টালমাটাল আমেরিকার ষাট সত্তর আর আশি’র দশকের হতাশাগ্রস্থ তারুণ্যের আশ্রয় ছিল- সেক্স ড্রাগস এন্ড রক এন রোল। সেই সময়ে অভিমানী এক তরুণ ঢাকা থেকে চলে গিয়েছিলো আমেরিকার সান-ফ্রান্সিসকোতে ডাক্তারি পড়তে। এটা সেই সান-ফ্রান্সিসকো যাকে বলা হত ‘এন্টি কালচার’ বা হিপ্পি আন্দোলনের রাজধানী। সহপাঠীদের সাথে ভিয়েতনাম যুদ্ধ বিরোধী শান্তি আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে করতেই তার চোখে পড়ছিল পুজিবাদের গভীর সংকট আর বীভৎস রক্তাত্ত ক্ষত গুলো। দুই আদর্শবাদের ধারক দুই পরাশক্তির লড়াইয়ের ভেতর দিয়ে বের হয়ে আসা অন্ধকার রাজনীতি সেই তরুণকে পরিণত করেছিল বিশ্বনাগরিক। ৬০ মিলিয়ন লম্বা চুলের হিপ্পি যখন আমেরিকার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে, যখন আমেরিকার ঘরে যুদ্ধ বাহিরে যুদ্ধ, ঠিক তখন ছেলেটির জীবনে প্রেম হয়ে আসে মেলিনি নামের প্রখর রাজনীতি সচেতন দেশপ্রেমিক এক আমেরিকান নারী। যাকে রাশিয়ান স্পাই মনে করে হন্যে হয়ে খুঁজছে এফবিআই। এরপর শুরু হল তাদের পলাতক জীবন। মেলিনি কে নিয়ে টেক্সাস থেকে চোরাই পথে মেক্সিকো ঢোকার সময় ছেলেটির জীবনে ঘটে এক চরম বিপর্যয়। প্রায় ৭০ বছর বয়স নিয়ে সেই তরুণ আবার ঢাকায় ফেরে। কর্মসুত্রে পরিচয় হয় এক তরুণীর সাথে, যে তরুণীর মনন তৈরি হয়েছিল সেই সময়ের এলভিস প্রেসলী, বিটলস, বব ডিলা্‌ন, জিমি হ্যান্ড্রিক্স, জিম মরিস্‌ন, লেড জেপলিন, পিঙ্ক ফ্লয়েড, ইউ-টু আর নির্ভানা শুনে শুনে। অদ্ভুত ভাবে মেয়েটি লোকটির সেই ৩০ বছর বয়সের সেই লম্বা চুলের হিপ্পির প্রেমে পরে যায়। সমস্যাটা শুরু হয় তখনই। এই উপন্যাসের স্থান সত্য, কাল সত্য, ইতিহাস সত্য, কাল্পনিক শুধু এর চরিত্রগুলো।

BUY THIS BOOK FROM ROKOMARI

 

পাঠক প্রতিক্রিয়া


পাঠক প্রতিক্রিয়া –

The main character Dervish is Jamshed himself, bohemian, loving heart, intelligent, away from the worldly affairs, looking for love, brave, spiritual, music-loving, god-fearing, nostalgic, infatuations for women, storyteller, who lives in a dream also knowing the real-world consequence,

read more...

the author makes the excellent chemistry between Rodela and Jamshed, there is a romantic tense between them, an infatuation, author Shibli takes them in a dream journey, then tells us the worldly affairs through Sanju, a real-world problem most people face, there is also a solution which is belief and love, and this is the main theme. He tells the story of America in the ’60s, where Jamshed finds love and a solution for world peace, realized it was fake, because what we know, repetition of Vietnam, we know Satan plays both cards. Jamshed got the touch. Maybe he didn’t realize it fully. Similarly, he finds peace in late-night Azan without crying to his maker, who called him. There is a twist and turns in the story. He finds love in an unexpected place, such as in Rodela, love is universal without any boundary, but they both understand the limits of responsible and caring. The description of America, Jamshed in the USA is boring maybe because I am unfamiliar with the culture, sometimes unrealistic, his becoming rich was not dramatic enough, I thought it is not so easy, but it is possible, the family affairs between Rodela and Sanju is real and truthfully described, the ending brings tears which states love is universal at the same time it is belief and trust which is above all more important than anything else. The author selects beautiful words, writes well of the affairs of human emotions of love, anger, betrayal, hopeless infatuation, and spirituality have a mysterious beginning and a heart-touching satisfying ending. It is an optimistic book, and philosophic, has taught for a common problem of this age, how Jamshed found his love in Rodela is amazingly surprising, the name Darvish of the book is also dramatic, and goes well with the book, the author Shibli is part of Jamshed. The book cover and paper quality binding are excellent. I give this book 3.5 out of 5 stars.

read less

Tarik Zaman

Article link


 

পাঠক প্রতিক্রিয়া –

দারবিশ: স্বার্থহীন অপার্থিব ভালোবাসা আত্মার শক্তি
———-
একজন লেখকের মূল শক্তি হলো তাঁর লেখার মাধ্যমে পাঠকের আত্মাকে, হৃদয়টাকে ছুঁয়ে দিতে পারা! ঔপন্যাসিক লতিফুল ইসলাম শিবলী সে কাজটা দারুণ মুন্সিয়ানায় করে চলেছেন বেশ ক’বছর ধরে। যেখানে বহু লেখকের লেখা আমাদেরকে স্থুল আনন্দে হাসায়, কাঁদায়; সেখানে জনাব লতিফুল ইসলাম শিবলী-র লেখা আমাদেরকে গভীর আবেশে আবিষ্ট করে, বাকরুদ্ধ করে দেয় পরম মমতায়!

read more...


১ নভেম্বর ১৯৫৫ থেকে শুরু হয়ে ৩০ এপ্রিল ১৯৭৫ পর্যন্ত দীর্ঘ ১৯ বছর, ৫ মাস, ৪ সপ্তাহ ও ১ দিন ব্যাপী বিস্তৃত ভিয়েতনাম যুদ্ধ (ভিয়েতনামীয়: Chiến tranh Việt Nam) তথা দ্বিতীয় ইন্দোচীন যুদ্ধ বা ভিয়েতনামে আমেরিকার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ (ভিয়েতনামীয়: Kháng chiến chống Mỹ) বা সহজভাবে আমেরিকান যুদ্ধ ১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিলে সাইগনের পতন পর্যন্ত ভিয়েতনাম, লাওস এবং কম্বোডিয়ায় চলাকালীন সংঘাত। এটি ছিল দ্বিতীয় ইন্দোচীন যুদ্ধ এবং সরকারিভাবে উত্তর ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ ভিয়েতনামের মধ্যেকার লড়াই। সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীন এবং অন্যান্য কমিউনিস্ট মিত্রদেশ উত্তর ভিয়েতনামকে সমর্থন করেছিল; অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড এবং অন্যান্য কমিউনিস্ট-বিরোধী মিত্রদেশ দক্ষিণ ভিয়েতনামকে সমর্থন করেছিল। কারও কারও কাছে এই যুদ্ধ, স্নায়ুযুদ্ধ-যুগের প্রক্সি যুদ্ধ হিসেবে বিবেচিত; যা ১৯৭৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ জড়িত থাকার মধ্য দিয়ে ১৯ বছর ধরে চলেছিল এবং এতে লওটিয়ার গৃহযুদ্ধ ও কম্বোডিয় গৃহযুদ্ধ অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা এই তিনটি দেশের কমিউনিস্ট হওয়ার মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটেছিল।
উপরোক্ত যুদ্ধের সময় অ্যামেরিকার অভ্যন্তরে আমরা এক ভিন্ন অ্যামেরিকার সন্ধান পাই লতিফুল ইসলাম শিবলী রচিত “দারবিশ” উপন্যাসের মাধ্যমে- যে অ্যামেরিকা যুদ্ধের বদলে “পিস এন্ড লাভ” এর কথা বলে! ষাট মিলিয়ন (৬ কোটি) লম্বা চুলের হিপ্পিদের কথা, ষাট, সত্তর ও আশির দশকে একটা বিশাল সংখ্যক অ্যামেরিকান তরুণদের হতাশা থেকে সৃষ্ট “সেক্স, ড্রাগস এবং রক এন রোল” এর সেই ইতিহাস, এলভিস প্রিসলি, বব ডিলান, বিটেলস, জিম মরিসন, জিমি হ্যাড্রিক্স, পিঙ্ক ফ্লয়েড, ইউ-টু এবং নির্ভানার গানগুলোয়, গানের লিরিকে উঠে আসা দেশপ্রেম, প্রতিবাদ, দ্রোহ আর স্রোতের বিপরীতে বুকটান করে পথচলার যে দুঃসাহসের গল্প- সবকিছুই উঠে এসেছে এই উপন্যাসের বিবরণীতে! এ যেন অ্যামেরিকার হৃদয়ের গভীরের এক স্রোতস্বিনীকে মানবিকতা আর মমতার সাথে কলমের তুলিতে, গল্পকথকের মহান ধারাবিবরণী তে এমনভাবে তুলে আনা যা পাঠকের মনে বিন্দু পরিমাণও বিরক্তি অথবা ইতিহাস পাঠের রসকষহীন কাঠিন্য তৈরি করে না! একটু সচেতনভাবে পাঠ করলে একশ উনিশ (১১৯) পৃষ্ঠার এই ছোট্ট কলেবরের বইটি আমাদেরকে এমনসব ইতিহাস ও সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিতে পারে যা জানা ইতিহাস-সচেতন প্রতিটি মানুষের জন্য জরুরি!
না।
এটা কোনো ইতিহাসের বই নয়। বরং গল্পের প্রয়োজনে, গল্পের বাঁকে বাঁকে ইতিহাস খুবই সংক্ষিপ্ত আকারে উঠে এসেছে। তাই ইতিহাসের উল্লেখ থাকলেও “দারবিশ” মূলতঃ অসাধারণ একটা প্রেমের উপন্যাস! সেইসাথে লতিফুল ইসলাম শিবলী-র সহজাত বৈশিষ্ট্য “কথোপকথনের মাধ্যমে জীবনের মহত্ত্বের দীক্ষা দেয়া” অথবা “মানবিকতার শিক্ষা প্রদান” এই উপন্যাসেও সরবে উপস্থিত রয়েছে! এছাড়াও কিছু কিছু বাক্য আছে এমন যেগুলো জনাব শিবলী-র বাণী হিশেবে আলাদাভাবে গ্রন্থিত হতেই পারে!
দু’একটা নমুনা দেয়া যাক।
“সুর যখন ক্ষমতায় সাম্রাজ্য তখন নির্জনতার।”
“স্বার্থহীন অপার্থিব ভালোবাসা আত্মার শক্তি।”
“যারা জীবনের রহস্য জেনেছে তারাই পেরেছে সুখী হতে। এই রহস্যের দরজা খোলার জন্য প্রয়োজন শক্তি- বিশ্বাসের শক্তি।”
“সাধু সাধু ভাব ধরে আর স্পিরিচুয়াল কথা বলে মেয়ে পটানো খুবই আপগ্রেডড ভার্সনের লাম্পট্য।”
“…(খাবারের) স্বাদটা দামের উপর নির্ভর করে না।”
“গভীর অর্থবোধক অনেকগুলো কথার সংক্ষিপ্ত কথা হলো কবিতা।”
এছাড়া বরাবরের মতোই জনাব শিবলী বেশকিছু দার্শনিক বক্তব্য প্রদান করেছেন কথোপকথনের মাধ্যমে- যা অসাধারণ, অনন্য, থট-প্রোভোকিং!
যেমন-
“আমার এক স্কয়ার মিটারের মধ্যে যা আছে এর বাইরে কোনোকিছুই আমার না। তোমার জমিন সেটুকুই যেটুকুর ওপরে তুমি দাঁড়িয়ে বা বসে আছ। তোমার টাকা সেটুকুই যেটুকু এখন তোমার পকেটে আছে। যদিও ব্যাংকে তোমার হাজার কোটি টাকা আছে, তোমার খাদ্য সেটুকুই যেটুকু তোমার পেটে চলে গিয়েছে- যদিও তোমার টেবিল ভরা খাবার। তোমার পোশাক সেটুকুই, যা এই মুহূর্তে তুমি পরে আছ, যদিও তোমার ওয়ারড্রোব ভরা জামা-কাপড়। অনেক কিছুর মালিকানা আসলে সেন্স অব ওনারশীপ।….”
কিছু কিছু লাইন পড়লে মনে হবে এ যেন উপন্যাস নয়, কোনো মহান কবির কবিতার লাইন পড়ছি!
যেমন-
“… এই জায়গাটা নিজেই এক টুকরো কবিতা, আর আমরা কবিতার ভিতর দিয়েই হেঁটে যাচ্ছি। প্রকৃতি এখানে কবিতায় মৌন, কবিতায় মুখর।”
আহা, কি অসাধারণ বর্ণনা!
এক সময় আমি “দ্য সাউন্ড অব সাইলেন্স” গানের কথাগুলো প্রচুর বলতাম! এই উপন্যাসে দেখি সুন্দরভাবে সেইসব কথা উঠে এসেছে। এলভিস প্রিসলি, বব ডিলান, পিঙ্ক ফ্লয়েডের সুরে ডুবে ছিলাম বছরের পর বছর! জনাব শিবলী-ও তাদের কথা এমনভাবেই লিখেছেন যে দারুণভাবে রিলেট করতে পেরেছি!
.
যাহোক, পাঠ-প্রতিক্রিয়া আর বড় না করে বলবো বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য এবং অসাধারণ উপাদান এই “দারবিশ” উপন্যাস। যদিও লেখক আরেকটু বিস্তৃত ও সবগুলো চরিত্রকে আরেকটু ফোকাসের আওতায় আনলে ভালো হতো। আরো ভালো হয় যদি নায়িকা “মেলিনি” কে নিয়ে পরবর্তী তে এই বইয়ের সিক্যুয়াল বের করেন!
সবশেষে দারবিশ তথা নায়ক জামশেদ এর শেষ কথাগুলো দিয়ে এই লেখাটা শেষ করি-
“ভালোবাসা আর বিশ্বাসহীন জীবন, মাঝিহীন নৌকার মতো। তাই ভালোবাসবে আর বিশ্বাস দিয়েই জীবনকে যাপন করবে।….”
আর হ্যা, লেখক, প্রিয় শিবলী ভাই-র জন্য অজস্র দোয়া ও শুভকামনা জানিয়ে শেষ করছি। আশা করি, তাঁর আগামীর লেখাগুলো এভাবেই আমাদেরকে আলোকিত, সমৃদ্ধ ও আপ্লুত করতে থাকবে……!

read less

আবদুল মালেক

Article link